ছেলেটার একটা স্বপ্ন ছিল। দেশের বিখ্যাত বিসনেস স্কুলে পড়াশুনা করবে সে৷ বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান থেকে নামী ডিগ্রি। আর তারপর ছাপোষা মধ্যবিত্তের যা স্বপ্ন থাকে একটা ভালো চাকরি, ভালো মাইনে, আর্থিক স্বাধীনতা, স্বচ্ছন্দ জীবন আর কী চাই! সুন্দর জীবন কে না চায়! কিন্তু চাইলেই কি আর মনের মত সব হয়৷ এক্ষেত্রেও হল না। বারবার CAT পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রতিবার সেই পরীক্ষায় তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন।
বারবার ব্যর্থ হতে হতে অবশেষে ভালো চাকরি আর মোটা মাইনের আশা ছেড়ে নিজের রোজগারের চেষ্টা করতে শুরু করলেন৷ কী করবেন?তিন তিনবার ফেল, বেকারত্ব এবং হতাশা তাকে ঘিরে ধরে। শেষে এমবিএ পড়ার ইচ্ছে ছেড়ে ম্যাকডোনাল্ডের আউটলেটে কাজ করে। কিন্তু এতে মনে শান্তি ছিল না। নিজে ব্যবসা করবেন, মোটা পুঁজি নেই৷ তাই যেটুকু টাকা আছে তাই নিয়ে চা বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মধ্যপ্রদেশের প্রফুল বিল্লোরে। মধ্যবিত্ত বাড়ির মূল্যবোধ হয়ে উঠল বাধা৷ তাই আহমেদাবাদে এমবিএ পড়ার নাম করে রাস্তার ধারে চা বিক্রি করতে শুরু করলেন তিনি। দোকানের নাম দেন এমবিএ চা’ওলা। দোকানের নাম দেখে সবাই ভাবত বেকারত্ব এর যুগে হয়ত ছেলেটি এম বিএ করেও চাকরি না পেয়ে চা বিক্রি করছে৷ কিন্তু বাবা জানতেন তখনো ছেলে এমবিএ পড়ছে। তাই দোকানের নাম দিয়েছিলেন এমবিএ চাওলা।
কিন্তু পথ এখানেও এত সহজ ছিল না। গ্রাহক নেই চা বিক্রি করবে কাকে? তাই নিজেই গ্রাহকের কাছে পৌঁছে গেলেন চা নিয়ে৷ মিষ্টি ভদ্র ব্যবহারে গ্রাহক খুশি হলেন৷ বিক্রি হতে থাকল বটে কিন্তু আশেপাশের চা বিক্রেতারা এই কাজ ভালো নজরে দেখলেন না৷ হুমকি দিতে থাকলেন৷ কিন্তু ভালো কাজের কদর আজও হয়৷ তাই ক্রেতারাই তার খোঁজ করে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে তাকে খুঁজে আনল।
ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে থেকেও স্বপ্ন সত্যি করেছে এই মেয়ে
বাবাকে মিথ্যা বলে বাবার থেকে আট হাজার টাকা নিয়ে সেই টাকায় সরঞ্জাম কিনে রাস্তায় রাস্তায় চা বিক্রি করা শুরু করেন। একদিন যেখানে পড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন আজ সেখানকার ছাত্রদের জীবনের পথে চলতে শেখান৷ এখন তার অধীনে কুড়ি জন কর্মচারী রয়েছে। হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল এ ব্যবসা করার জন্য নতুন প্রজন্ম কী করবে সেই বিষয়ে বক্তৃতা দেন প্রফুল বিল্লোরে৷ ইচ্ছেটাই সব, কোনো কাজ ছোটো হয় না মন থেকে করলে ।