ভারতবর্ষের মত তৃতীয় বিশ্বের দেশে বেকারত্ব এক জ্বলন্ত সমস্যা৷ সম্প্রতি করোনা মহামারী সেই সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে৷ একটা ভালো চাকরি, স্বচ্ছল জীবন যাপন আমরা সকলেই চাই৷ কিন্তু চাকরি চাইলেই কি আর মেলে!
ভালো বেতনের চাকরি পাওয়া সত্যিই কঠিন। কোনভাবেই ভালো একটা চাকরি না পাওয়া গেলে মনের বিরুদ্ধে গিয়ে জীবন চালানোর জন্য এমন চাকরি করতে হয় যাতে জীবন চলে যায় কিন্তু বাঁচার আনন্দটুকু থাকে না৷ কিন্তু না আর কোনো নেগেটিভ কথা নয়৷ এবার এমন কিছু চাকরির কথা বলব যা শুনলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন৷ এবং এই চাকরি কিন্তু কেবল শখের নয়, রীতিমত পেশাদারি চাকরি, সুন্দর জীবনযাপন করা যায় এসব চাকরি থেকে৷
এই পৃথিবীতে এমন কিছু অদ্ভুত চাকরি রয়েছে, যাদের আদতে ‘অড জব’ মনে হতে পারে৷ কিন্তু এসব চাকরিতে যা বেতন দেওয়া হয় তা শুনলে চোখ কপালে উঠবে৷
বিয়েবাড়ির ভোজ খান সঙ্গে পান নগদ টাকা
এখন বিয়ের মরশুম চলছে৷ বিয়ে মানেই ভিড়,হুড়োহুড়ি এই তো ভাবি আমরা৷ কিন্তু এমনও দেশ আছে যেখানে বিয়েবাড়িতে অতিথি কম পড়ে। তাই বিয়েতে অতিথি ভাড়া করা হয় টাকার বিনিময়ে৷ আজ্ঞে হ্যাঁ এটাই চাকরি৷ এমন চাকরিও আছে দুনিয়ায়৷ জাপানে এই ধরনের এই কাজের প্রচলন রয়েছে৷ বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথি সমাবেশ এর জন্য টাকার পরিবর্তে তাদের বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রণ জানানো হয়৷ তারা বিয়েবাড়ি গিয়ে খেয়ে আসেন৷ আরভেই কাজের জন্য তাদের দেওয়া হয় নগদ অর্থ৷
কান্নার চাকরি
মৃত্যু দুঃখজনক৷ দুঃখের সময় কান্না পাওয়া স্বাভাবিক৷ কিন্তু কান্নার জন্য চাকরি? সিনেমা নয়, বাস্তবেই এমন কাঁদার চাকরি আছে৷ কিছু মানুষকে ভাড়া পাওয়া যায়, যাদের কাজ কোনো মানুষের মৃত্যু হলে সেখানে গিয়ে কান্নাকাটি করা৷ মানুষের মৃত্যুতে অর্থের বিনিময়ে তাদের কাদতে হবে এই কাজ৷
লাইভ ম্যানেকুইন
বিভিন্ন কাজে আমাদের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়৷ এই লাইনে দাঁড়ানো বিরক্তিকর কাজ। তখন যদি এমন কিছু সামনে থাকে যা সময় কাটিয়ে দেবে তাহলে কিন্তু বেশ হয় । এক্ষেত্রে লাইভ ম্যানিকুইন কিন্তু রোমাঞ্চকর হতে পারে৷ বিভিন্ন বড় বড় শপিং মলে বা শো-রুমে ফ্যাশনেবল ডামি থাকে। তারা বিভিন্ন ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে বা বসে থাকে। অনেকে লাইভ ম্যানিকুইন প্রদর্শনের জন্য মডেলদের ভাড়া করা হয়। প্রতি ঘণ্টায় একজন মডেল লাইভ ম্যানেকুইন সেজে ৮০০০ টাকা পর্যন্ত রোজগার করতে পারে৷
‘ফেস ফিলার’
ক্লিনজার আমরা মুখ পরিস্কার করতে ব্যবহার করি৷ এখন বিজ্ঞাপনে তো অনেক কিছুই দেখায়৷ কিন্তু এই প্রসাধন ব্যবহার করার পর মুখ কতটা পরিষ্কার হলো তা বুঝতে হয়, হাত বুলিয়ে অনুভব করার মাধ্যমে৷ এই কাজটি সবাই করতে পারেন না। এই কাজের জন্য প্রয়োজন স্পর্শের মাধ্যমে তীব্র অনুভূতির। এদের অনেক সময় সংবেদনশীল বিজ্ঞানীও বলা হয়। এই ধরনের ফেস ফিলার রাখা হয় বিদেশের বড় বড় করে প্রতি ঘণ্টার ডিউটির জন্য ২৫ ডলার মত পাওয়া যায়৷ ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২০০০ টাকা মত।
গন্ধ পরীক্ষক
এদের কাজ পেপার টাওয়েলের গন্ধ নেওয়া। টয়লেট টিস্যু থেকে শুরু করে পেপার টাওয়েলের গন্ধ তারাই পরখ করে দেখতে পারেন, যারা গন্ধের বিষয়ে সংবেদনশীল। প্রতি সপ্তাহে এদের বেতন ৮০ হাজার টাকার কাছাকাছি৷
লাইভ মডেলিং
চিত্রশিল্পে ন্যুড পেন্টিং একটি বিশেষ আর্ট ফর্ম৷ সারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রখ্যাত শিল্পীরা এই আর্ট ফর্ম অনুশীলন করেন৷ এই চিত্রশিল্পীদের ছবি আঁকার জন্য অনেক সময় মডেল দরকার হয়। ন্যুড পেন্টিং করার সময় লাইভ স্কেচ এর জন্য নগ্ন মডেল হিসেবে নির্দিষ্ট সময় বসে থাকার জন্য পেশাদার নারী-পুরুষ কাজ করেন। এ কাজে প্রতি ঘণ্টার জন্য ৫০-১০০ ডলার পর্যন্ত দেওয়া হয়। অর্থাৎ, ২-৩ ঘণ্টার একটি ছবি আঁকার জন্য একটি সেশনে ৪ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা আয় করা যায় ।
ওয়াটার স্লাইড পরীক্ষক
এই চাকরিতে ওয়াটার স্লাইড পরীক্ষা করতে হয়। বিভিন্ন পার্ক, বা বিনোদন এর জায়গায় ওয়াটার স্লাইড থাকে। এক্ষেত্রে পরীক্ষা করতে হয়, এই ওয়াটার স্লাইডগুলোর নিরাপত্তা। সেইসাথে রাইডগুলো কতটা আরামদায়ক তা পরীক্ষা করতে হয়। বিভিন্ন ওয়াটার পার্কে ভ্রমণ করে এই ক্ষেত্রে পেশাদারী লোকজন স্লাইড দেখার কাজ করেন৷ কাজটা বেশ মজাদার৷ বিনামূল্যে ভ্রমণও করা যায়। বছরে ৩০ হাজার ডলার বা ২৪ লাখ টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা যায়।