মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী আমাদের কাছে পরিচিত মহাত্মা গান্ধী নামে৷ মহাত্মা গান্ধীর জন্ম হয়েছিল ২অক্টোবর, ১৮৬৯ সালে৷ গান্ধীজির মৃত্যু হয় ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি।গান্ধীজির মৃত্যু দিনটিকে শহিদ দিবস হিসেবে পালন করা হয়। প্রতি বছর এই দিনটি মহাত্মা গান্ধী ও দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ বীর যোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পালন করা হয়ে থাকে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্রগণ্য ব্যক্তি গান্ধীজি৷ লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন গান্ধীজি। অহিংস মতবাদে বিশ্বাসী গান্ধীজি মনে করতেন হিংসার দ্বারা কোনো আন্দোলন সফল হতে পারে না। এই অহিংস মনোভাব ছিল ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম চালিকা শক্তি, সমগ্র বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা এবং অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের অন্যতম অনুপ্রেরণা ছিল এই আন্দোলন।
১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি গান্ধীজিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সে সময় তিনি নিউ দিল্লির বিড়লা ভবনের (বিড়লা হাউস) মাঝে রাত্রিকালীন পথসভা করছিলেন। হিন্দু মহাসভা পাকিস্তানিদের অর্থ সাহায্য দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। ভারতকে দুর্বল করার জন্য গান্ধীকে দোষারোপ করা হয়৷ গডসে এবং সহায়তাকারী নারায়ণ আপতেকে ১৯৪৯ সালের ১৪ নভেম্বর ফাঁসি দেওয়া হয়।
নতুন দিল্লির রাজঘাটের স্মুতিসৌধে লেখা “হে রাম” “ও ঈশ্বর” এই দু’টি শব্দকে গান্ধীর শেষ কথা বলে বিশ্বাস করা হয়। গান্ধীজির মৃত্যুর পর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু রেডিওতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, “বন্ধু ও সহযোদ্ধারা আমাদের জীবন থেকে আলো হারিয়ে গেছে, এবং সেখানে শুধুই অন্ধকার এবং আমি ঠিক জানি না আপনাদের কী বলব কেমন করে বলব। আমাদের প্রেমময় নেতা যাকে আমরা বাপু বলে থাকি, আমাদের জাতির পিতা আর নেই। হয়ত এ ভাবে বলায় আমার ভুল হচ্ছে তবে আমরা আর তাঁকে দেখতে পাব না যাঁকে আমরা বহুদিন ধরে দেখেছি, আমরা আর উপদেশ কিংবা স্বান্ত্বনার জন্য তাঁর কাছে ছুটে যাব না, এবং এটি এক ভয়াবহ আঘাত, শুধু আমার জন্যই নয়, এই দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের জন্য।”
গান্ধিভক্ত তাই নেতাজি নিজের বইয়ের ভূমিকা লিখতে দিতে চান নি রবীন্দ্রনাথকে
কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে শহিদ দিবসে রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, এবং তিন বাহিনী প্রধান দিল্লির রাজ ঘাট স্মৃতিসৌধের সমাধিতে জড়ো হন। সকাল ১১টায় শহিদ দের স্মরণে দেশজুড়ে দুই মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। ৭৮ বছর বয়সে নাথুরাম গডসের গুলিতে মৃত্যু হয় গান্ধীজির৷ ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি, গান্ধী নয়া দিল্লির বিড়লা হাউজ থেকে বেরিয়ে একটি প্রার্থনা সভায় যাচ্ছিলেন উঁচু লন ধরে৷ মঞ্চে ওঠার আগেই গডসে ভিড় ঠেলে গান্ধীর বুকে তিনটি গুলি চালিয়েছিলেন। তৎক্ষনাত গান্ধীজিকে বিড়লা হাউসে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁর মৃত্যু হয়।