বাইরে থেকে যারা কলকাতা ঘুরতে আসেন তাদের কাছে এখনো কফি হাউস একটা আকর্ষণ৷ সদ্য নিউ টাউনের ঝাঁ চকচকে কফি হাউস হয়েছে তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে৷ কিন্তু ইতিহাস ও ঐতিহ্যে এখনও পুরোনো কফি হাউস দর্শনীয় স্থান৷ মান্নাদের তুমুল জনপ্রিয় “কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই” গানের আগে থেকেই কফি হাউসের এই জনপ্রিয়তা ছিল কি?
কফি হাউসের জনপ্রিয়তা কি কেবল পুরোনো ঐতিহ্যের টানে নাকি কলেজ স্ট্রীট বইপাড়ার ভিড়, কলেজের ছাত্রছাত্রীর আড্ডা সব মিলেই এই জনপ্রিয়তা? মান্নাদের গানই জনপ্রিয় আর এতটা আলোচিত করে তুলেছে? নাকি আগে থেকেই কফি হাউসের এই খ্যাতি বিদ্যমান ছিল।
এমন অনেকেই আছেন কলেজ স্ট্রীট চত্বরে গেলে একবার ঢুঁ মেরে আসেন৷ দিরকার থাকুক না থাকুক এক কাপ ইনফিউশান আবার তাও না হলে এমনিই ঢুকে সিড়ি দিয়ে ওপরে উঠে আবার নেমে এলেও যেন শান্তি৷
গান্ধিভক্ত তাই নেতাজি নিজের বইয়ের ভূমিকা লিখতে দিতে চান নি রবীন্দ্রনাথকে
কত শত আন্দোলন, স্বাধীনতার ডাক, কত প্রেম-ভালোবাসা, সফলতা-ব্যর্থতা, ব্যথা-উৎসাহ, উদ্দীপনা, অনুপ্রেরণার সূতিকাগার এই কফি হাউজ। কফি হাউস এর ইট, কাঠ, শত বছরের পুরনো, কড়িকাঠ ফ্যান ইতিহাসের সাক্ষী এই চেয়ার-টেবিল।
রাস্তার অদূরে একটি মোড়। বামে ঢুকলেই কফি হাউস। বইয়ের রাজ্যে দুপাশের ফুটপাথে৷ ফুটপাথ ধরে কিছুটা এগোতেই কাঙ্ক্ষিত সেই মোড় । মোড় থেকে বাঁদিকে গেলেই কফি হাউস৷ প্রায় শত বছরের পুরনো, কত শত কালের সাক্ষী, কফি হাউসের উঁচু পুরনো দালানের নিয়ন আলো।
ঘোরানো সিঁড়ি, বইয়ের দোকান, শত বছরের পুরনো লেটার বক্স, জং ধরা, প্রাচীন আমলের বৈদ্যুতিক মিটার, এসবের মধ্যেই দোতলার সিঁড়ি৷ ওপরে উঠে দাঁড়ালে নীচের দিকে তাকালে মনে হয় মান্না দের গানের চরিত্ররা সবাই দাঁড়িয়ে আছে কফি হাউসের সামনে। একালের এক অনাগতকে দেখছেন অদৃষ্টের আডাল থেকে ।