প্রত্যেকটা দেশের জাতীয় সঙ্গীত থাকে৷ স্কুলজীবনে জাতীয় সঙ্গীত এর কথা আর সুর মুখস্থ করা একটা রুটিন বটে৷ প্রার্থনার সময় গাইতে হত সেই গান৷ জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমেই শিশুকালে দেশ সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয়৷ কিন্তু যদি কথাই না থাকে তাহলে? এমন কিছু দেশ আছে যাদের জাতীয় সঙ্গীতে আছে কেবল সুর নেই কোনো কথা৷ পৃথিবীর চারটি পরিচিত দেশের জাতীয় সংগীতে কোনো কথা নেই, রয়েছে শুধু সুর। দেশীয় বাদ্যযন্ত্র এর সাহায্যে তৈরি হয়েছে নানারকম সুর৷ স্পেন, বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, সান মারিনো এবং কসোভো এই সব দেশের জাতীয় সঙ্গীতে নেই কথা ৷
‘মার্সা রিয়েল’ নামে খ্যাত স্পেনের জাতীয় সঙ্গীত৷ ১৮৬১ তে প্রাশিয়ার রাজা দ্বিতীয় ফ্রেডেরিক এই সংগীত রচনা করেন বলে অনুমান। ১৮৬৪ তে প্রাশিয়ায় প্রবল জনপ্রিয় হয় এই গান৷ ১৯০৮ এ স্পেনে প্রকাশিত এনসাইক্লোপেডিয়া ‘এস্পানা’তে রয়েছে এই গান । রাণী দ্বিতীয় ইসাবেলা, এই গানকে স্পেনের জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা করেন। গানের কথা লেখার আহ্বান করা হয় ২০০৭ সালে। অনেক লিরিক্স জমা পড়ে। কিন্তু স্পেন সরকারের পছন্দ হয়নি কোনো লিরিক্স ৷ তাই কেবল সুর রয়েছে এই গানে৷
সুরের প্রতিও রাজশাসন জারি করা যায়!
দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ বসনিয়া। এই দেশের জাতীয় সংগীতেও নির্দিষ্ট কোন কথা নেই। স্থানীয়ভাবে এই দেশে জাতীয় সঙ্গীতে কিছু কথা থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি নেই। ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কথাহীন এই সংগীতটি বসনিয়ার জাতীয় সংগীত রূপে বিবেচিত হয়৷ বিখ্যাত ইতালিয়ান বেহালাবাদক ফেদেরিকো কনসোলো ১৮৯৪ সালে একটি সংগীত রচনা করেন। এই কথাহীন গান সান মারিনোর জাতীয় সংগীত হিসেবে প্রচলিত। স্থানীয় ভাষায় সান মারিনোর জাতীয় সংগীতকে বলা ‘ইন্নো নোজিওনালে’।
কসোভার জাতীয় সঙ্গীতে কোনো কথা না থাকায় শুরু থেকেই ছিল আলোচিত৷ প্রিস্টিনা শহরে কসোভার জাতীয় সঙ্গীতের কথা লেখার জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় ২০০৮ সালে৷
কিন্তু প্রতিযোগিতা থেকে যে সব কথা পাওয়া গেছিল সেগুলো কেবল আঞ্চলিকভাবেই সীমাবদ্ধ থেকে গেছে৷ ইউরোপে এই গান হিমনি আই রিপাব্লিকাস সি কসোভাস বলে খ্যাত৷